Logo
Logo
×

সারাদেশ

ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালে খুশি চরাঞ্চলের বাসিন্দারা

Icon

চাঁদপুর সংবাদদাতা

প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৮ পিএম

ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালে খুশি চরাঞ্চলের বাসিন্দারা

ছবি-সংগৃহীত

চাঁদপুরের হাইমচরের চরাঞ্চলে চালু হলো ভ্রাম্যমাণ ভাসমান চিকিৎসা কার্যক্রম। এতে খুশি চরের দুই লাখ বাসিন্দা। হাইমচরের ঈশানবালা, গাজীপুর ও নীলকমল ইউনিয়নের বাসিন্দা জন্মের পর প্রথমবারের মতো সহজে এমন চিকিৎসাসেবা পেলেন। বুধবার হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের মেঘনা নদীর মিয়ারচরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা সচিব সাইদুর রহমান।

তিনি বলেন, নদীবেষ্টিত দুর্গম অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায় না। এ স্বাস্থ্যসেবা দৃষ্টি আকর্ষণ করার লক্ষ্যেই বাদশা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের নামে ভ্রাম্যমাণ ভাসমান হাসপাতাল কার্যক্রম শুরু হয়। সব মানুষ যাতে চিকিৎসাসেবা পায় পরিকল্পিতভাবে আমাদের কার্যক্রম সেভাবেই চলছে। 

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর, কিং আব্দুল্লাহ হিউম্যানিটিরিয়ান ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সোলায়মান আব্দুল আজিজ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন, পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিবসহ সৌদি আরব সরকারের প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিল।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন সংস্থাটি কাছে প্রসূতিদের চিকিৎসাসেবা বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়ে বলেন, চরে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় প্রসূতিদের। এই হাসপাতালে যদি প্রসূতিদের ডেলিভারি ব্যবস্থা যুক্ত করা হয় তাহলে আরও বেশি লাঘব হবে।

হাসপাতালের মাধ্যমে হাইমচরের প্রায় দুই লাখ মানুষ চিকিৎসাসেবা পাবে বলে জানা গেছে। এটি চাঁদপুরসহ লক্ষ্মীপুর ও ভোলা জেলায় অন্তত দুই মাস করে সেবা দেবে। সারা দেশে এমন পাঁচটি ভাসমান হাসপাতাল রয়েছে। 

স্থানীয়রা জানান, এখানে চাঁদপুরে মূল জনপদ থেকে বিচ্ছিন্ন নদীবেষ্টিত বেশ কয়েকটি দুর্গম চর। যেখানে চরবাসীর কাছে স্বাস্থ্যসেবা ছিল সোনার হরিণ। স্থানীয়ভাবে সরকারি-বেসরকারি, কোনো ধরনের স্বাস্থ্যসেবা পেত না তারা। তবে এসব চরবাসীর মধ্যে নতুন করে আশার আলো ছড়িয়েছে বাদশা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের নামে ভ্রাম্যমাণ ভাসমান হাসপাতাল। এটি পরিচালনা করছে ফ্রেন্ডশিপ নামে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। যেখানে মিলছে সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা। 

বাদশা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের নামে ভ্রাম্যমাণ ভাসমান হাসপাতালের লক্ষ্য একটাই চরের মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। প্রাথমিক চিকিৎসা, রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে ডেন্টাল, ফিজিওথেরাপি, চক্ষু চিকিৎসাসহ অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা। সবকিছুই মিলছে একেবারে বিনামূল্যে। এতে হাতের নাগালে এমন স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে দারুণ খুশি চরবাসী।

বিলকিস বেগম নামের এক নারী বলেন, এর আগে ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে উত্তাল নদী পেরিয়ে জেলা শহর কিংবা রোগের ধরন দেখে ছুটতে হতো রাজধানী পর্যন্ত। তা-ও যাদের আর্থিক সামর্থ্য ছিল শুধুই তারা চিকিৎসা নিত। আমাদের ব্যয়বহুল চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব নয়। এখানে ভাসমান হাসপাতাল হওয়ায় খুব উপকার পেয়েছি। বিনামূল্যে চক্ষু অপারেশন করেছি। এক টাকাও লাগেনি। আমি খুব খুশি।

ফ্রেন্ডশিপ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা রুনা খান জানান, প্রতিদিন ১৫০-২০০ রোগী এই ভাসমান হাসপাতালে চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ পাচ্ছে। সাতজন চিকিৎসকসহ ৩২ সদস্যের ভ্রাম্যমাণ ভাসমান হাসপাতালটিতে কার্যক্রম চলছে। হাইমচরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৩২ লাখ মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কাজ করছে এই প্রকল্প।


ইশা ফাউন্ডেশনের একটি প্রকাশনা

অনুসরণ করুন