স্ত্রীকে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা, স্বামী পলাতক

আশুলিয়া (ঢাকা) সংবাদদাতা
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৯ পিএম

ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় এক নারী পোশাক শ্রমিককে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে। ঘটনার পর থেকে ওই নারীর স্বামী পলাতক রয়েছেন।
রবিবার (২০ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ী এলাকার কালাম মাতবরের মালিকানাধীন পাঁচতলা ভবনের নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রোকসানা আক্তার নূরানী শেরপুর জেলার আব্দুর রশিদের মেয়ে। তিনি আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ী এলাকার কালাম মাতবরের বাড়িতে ভাড়া বাসায় বসবাস করে স্থানীয় ন্যাচারাল ইনডিগো লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানায় অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। পলাতক স্বামী মো. সোহাগ আন্তঃজেলা বাস কিংবা ভেকুর (এক্সকাভেটর) কনট্রাক্টর হিসেবে কাজ করেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
বাড়ির মালিক কালাম মাতবর জানান, ফজরের আগে ঘুম থেকে উঠে আগুন ও ধোঁয়ার গন্ধ পেয়ে নিচতলায় নেমে দেখা যায় সব ফ্ল্যাটের ছিটকিনি বাইরে থেকে বন্ধ করা। রোকসানার ফ্ল্যাটের দরজা খুলতেই দেখা যায় ঘরের ভেতরে ধোঁয়া। তখন প্রতিবেশীরা এসে পানি ছিটিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। পরে পেঁচিয়ে রাখা তোশক সরাতেই বের হয়ে আসে রোকসানা আক্তারের নিথর মরদেহ। বিছানায় রক্তের দাগ, গলায় আঘাতের চিহ্ন। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
প্রতিবেশীরা জানান, পাঁচ বছর ধরে স্ত্রীর কাছে আসেন না স্বামী। হঠাৎ করে তিন দিন আগে বাসায় এলে স্ত্রী রোকসানা আক্তার তাকে ঘরে ঢুকতে দিতে চাননি। স্বামী জানান, দুর্ঘটনায় তিনি আহত হয়েছেন, তার মাথা ফেটেছে। ঘরে ঢোকার জন্য আকুতি-মিনতি করতে থাকেন তিনি। পরে বাড়ির মালিক ও অন্যরা রোকসানাকে বোঝালে তিনি রাজি হন। এই পাঁচ বছর ধরে স্ত্রীর কোনো খোঁজ নেননি, ভরণপোষণও দিতেন না স্বামী। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ চলছিল।
পুলিশ জানায়, রোকসানার স্বামী মাদকাসক্ত ছিলেন এবং তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। ধারণা করা হচ্ছে, দাম্পত্য কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন স্বামী। মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী পলাতক রয়েছেন।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলতে চেয়েছিলেন স্বামী। আগুনের নাটক সাজিয়ে ঘটনা অন্যদিকে প্রভাবিত করতে চেয়েছিলেন হত্যাকারী। আমরা তদন্ত করছি। পুলিশ কাজ করছে। পলাতক স্বামীকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।