মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ-হত্যার বিচার শুরু

মাগুরা সংবাদদাতা
প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৪ পিএম

মাগুরার আলোচিত আট বছরের শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। একই সঙ্গে বিচারক ২৭ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক এম জাহিদ হাসান এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু করেন।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে এ মামলার চার আসামি শিশুটির বোনের স্বামী সজিব শেখ, শ্বশুর হিটু শেখ, শাশুড়ি রোকেয়া বেগম এবং দেবর রাতুল শেখকে আদালতে হাজির করা হয়।
এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মনিরুল ইসলাম মুকুলসহ অন্য আইনজীবীরা।
মামলাটিকে জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে রাষ্ট্রপক্ষকে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কৌঁসুলি দলের বিশেষ উপদেষ্টা (স্পেশাল প্রসিকিউটরিয়াল অ্যাডভাইজার) আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ গঠন শুনানিতে তিনিও অংশ নেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলায় শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯/২ ধারায় (ধর্ষণের ফলে মৃত্যুর অপরাধ), বোনের স্বামী ও দেবরকে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারায় (ভয়ভীতি প্রদর্শন) এবং বোনের শাশুড়ির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় (অপরাধের আলামত নষ্ট) অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
শুনানি শেষে এহসানুল হক সমাজী বলেন, মামলার অভিযোগপত্র, মূল আসামির জবানবন্দিসহ অন্যান্য নথির ওপর ভিত্তি করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
তিনি বলেন, এই মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতের স্বার্থে বিচারক আসামিদের অবহিত করেন, তারা চাইলে নিজেদের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন। আইনজীবী নিয়োগ করতে হলে কারাবিধি অনুযায়ী আবেদন করতে হবে।
শিশুটির মা আয়েশা বেগম বলেন, আজ চার্জ গঠনের শুনানি শেষে চার্জ গঠন করা হয়েছে। তিনজন সাক্ষীকে আগামী ২৭ তারিখে সাক্ষী দিতে আদালতে আসার দিন ধার্য করা হয়েছে। আমি চাই আমার মেয়ের এই মামলাটি যেন দ্রুত শেষ হয়। আসামিদের উপযুক্ত শাস্তি আশা করছি।
গত ৬ মার্চ শহরতলির নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বড় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। প্রথমে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যার হাসপাতাল, পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়।
সবশেষ চিকিৎসারত অবস্থায় ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শিশুটি মারা যায়।
এ ঘটনায় শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখ, জামাই সজীব শেখ, তার ভাই রাতুল শেখ ও তাদের মা রোকেয়া বেগমের নামে মামলা করেন। পুলিশ চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
১৩ এপ্রিল আলোচিত এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন। আসামি রোকেয়া বেগমকে তথ্য গোপন, সজিব শেখ ও তার ভাই রাতুল শেখের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ আনা হয়েছে।