কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে মিয়ানমারের বিশেষ বিমানে স্বদেশে ফিরলেন মিয়ানমারের সেনা ও বিজিবি সদস্যসহ ৪০ নাগরিক। এর মধ্যে ৩৪ জন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের জেরে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া সেনা ও বিজিপি সদস্য। অন্য ৬ জন সীমান্ত অতিক্রম করে মাদকপাচার ও হত্যা মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগকারী আসামি।

কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে মিয়ানমারের বিশেষ বিমানে গতকাল বুধবার দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে যাত্রা দেন এই ৪০ জন।

 ‍বুধবার বেলা সোয়া ১১টায় মিয়ানমার সেনা ও বিজিপির ৩৪ সদস্যকে বাসে বিজিবি ও পুলিশের নিরাপত্তায় বিমানবন্দরে আনা হয়। পরে পৌনে ১২টার দিকে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগ শেষে মিয়ানমারের নাগরিক ৬ আসামিকে প্রিজেনভ্যানে আনা হয়।

এরপরই তাদের ফেরত পাঠাতে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন কার্যাদি সম্পাদনের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এখনে তাদের তথ্যাদি সংগ্রহ এবং যাচাই-বাছাইয়ের চলে।

কবক্সবাজার বিমানবন্দরের পরিচালক গোলাম মর্তুজা হোসান বলেন, ‘ফেরত যাওয়াদের মধ্যে মিয়ানমারের সেনা, বিজিপি ও মামলায় সাজাভোগকারীসহ ৪০ নাগরিক রয়েছেন। তাদের নিতে মিয়ানমারের একটি বিশেষ বিমান দুপুর ২টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরের অবতরণ করে। মিয়ানমারের এসব নাগরিকদের ইমিগ্রেশন কার্যাদি শেষ করেই তাদের ফেরত পাঠানোর হয়েছে।

বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়নের অধিনায়ক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এম এম ইমরুল হাসান জানান, ‘রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের জেরে গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত টেকনাফের দমদমিয়া, নাজিরপাড়া ও শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে পালিয়ে ৩৪ জন বিজিপি ও সেনা সদস্য আশ্রয় নিয়ে ছিল। এর মধ্যে ২১ জন বিজিপি সদস্য এবং ১৩ জন সেনা সদস্য ছিল। তারা কক্সবাজারে এতদিন বিজিবির হেফাজতে ছিল। এই ৩৪ জনের সঙ্গে বাংলাদেশের কারাগারে সাজাভোগ করা ৬ জন সংযুক্ত করে ৪০ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান হোসাইন সজীব জানান, মিয়ানমারের ৪০ নাগরিককে ফেরত পাঠাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট পর্যায়ের কর্মকর্তারা কক্সবাজার বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের কার্যাদি সম্পাদনের করেছেন।’

এর আগে ৪ দফায় পালিয়ে আসা আরও ৮৭৬ জনকে স্বদেশে ফেরত নিয়েছিল মিয়ানমার জান্তা সরকার। এর মধ্যে প্রথম দফায় গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩৩০ জন, একই বছরের ২৫ এপ্রিল ২৮৮ জন, ৯ জুন ১৩৪ জন এবং ২৯ সেপ্টেম্বর ১৩৪ জনকে ফেরত পাঠানো হয়। এর মধ্যে মিয়ানমারে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছে ২১৪ বাংলাদেশি।