ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নিমতলি এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় মাদারীপুর সদর উপজেলার একটি পরিবারের চার সদস্যসহ মোট পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ অ্যাম্বুলেন্সের চালকও রয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুত্বর আহত হয়েছে আরও ৩ জন। বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুর ১ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা সবাই মাদারীপুর সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের মিঠাপুর গ্রামের ফকিরবাড়ির বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিলাল ফকিরের স্ত্রী রোজিনা বেগম (৩০) অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন এবং গতরাত থেকে তিনি প্রসব বেদনায় ভুগছিলেন। এ কারণে পরিবারের ১০ জন সদস্য অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নিমতলি এলাকায় পৌছালে হঠাৎ করে একটি চাকা বিস্ফোরিত হয়। ফলে গড়ি থামি চালক রাস্তার ডান পাশে দাঁড় করিয়ে চাকা পরিবর্তনের কাজ শুরু করেন। এসময় পরিবারের কিছু সদস্য গাড়ির ভেতরে ও কিছু সদস্য গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ দ্রুতগতির ‘গোল্ডেন লাইন পরিবহন’ এর একটি বাস পেছন দিক থেকে দ্রুতগতিতে এসে থেমে থাকা অ্যাম্বুলেন্সটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। সংঘর্ষে অ্যাম্বুলেন্সটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই অ্যাম্বুলেন্স চালকসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়।

বাসের হেলপার সাইফুল ইসলাম শান্ত জানান, তারা কুষ্টিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর যাচ্ছিলেন। এক্সপ্রেসওয়ের ডান পাশে অ্যাম্বুলেন্সটি দাঁড়িয়ে থাকলেও অতিরিক্ত গতির কারণে চালক ফয়সাল (৪০) সময়মতো বাস থামাতে ব্যর্থ হন।

দুর্ঘটনার পর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করেন। আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসারা হাইওয়ে পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ আব্দুল কাদের জিলানী জানান, নিমতলা সড়ক দুর্ঘটনায়   গোল্ডেন  লাইনে বাসের সুপারভাইজার কল্যাণ বিশ্বাস (২৩)  ও সহকারি (হেলপার) সাইফুল ইসলাম শান্তকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বিকাল ৫ টায়  তাদের ২ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের আশপাশ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে হাসাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার ২জন ফাড়ির পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

এ ঘটনায় মাদারীপুর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।