সীমান্তে অনুপ্রবেশ
দুই জেলায় বিএসএফের ঠেলে দেওয়া শতাধিক মানুষ আটক

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) ও ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা
প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৫, ০৯:৩৪ পিএম

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের দুটি ভিন্ন এলাকায় গত দুই দিনে শতাধিক মানুষ ভারতে অবৈধভাবে অবস্থানের পর বাংলাদেশে ফেরত আসার সময় আটক হয়েছেন। মৌলভীবাজারের বড়লেখা এবং ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর সীমান্ত দিয়ে এসব অনুপ্রবেশ ঘটে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এদের বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, সীমান্তে এমন অনুপ্রবেশ ও ফেরত পাঠানোর ঘটনা মানবিক ও নিরাপত্তাজনিত সমস্যা। বিএসএফের এই ‘ঠেলে দেওয়া’ নীতির বিষয়ে দ্বিপাক্ষিকভাবে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে অধিকাংশই গরিব, কর্মসংস্থানের খোঁজে ভারত গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
বড়লেখায় দুই দিনে শতাধিক অনুপ্রবেশকারী
বড়লেখা উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে দুই দিনে শতাধিক মানুষ অনুপ্রবেশ করেছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে অনেকেই অ্যাম্বুলেন্স বা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। অনেকে আবার বিজিবির হাতে আটক হন।
বিয়ানীবাজার ব্যাটালিয়নের (৫২ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান পিপিএম বলেন, ‘সীমান্তে চেকপোস্ট বসিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের আটক করা হচ্ছে। তাদের ঠিকানা যাচাই-বাছাই চলছে। সবার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলার ৪ নম্বর উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারীরা সবাই বাংলাভাষী। বিজিবি তাদের আটক করে পরিচয় যাচাই করছে।’
ঠাকুরগাঁওয়ে ১০ জনকে আটক
একই সময়ের মধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ভাতুরিয়া ইউনিয়নের চাপসা সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ভারত থেকে আসার পথে ১০ বাংলাদেশিকে আটক করেছে বিজিবি। হরিপুর থানার ওসি মোহাম্মদ জাকারিয়া মন্ডল জানান, আটক ব্যক্তিরা সবাই দিনমজুর শ্রেণির বাংলাদেশি নাগরিক। কাজের সন্ধানে ভারতে গিয়েছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানানো হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আটক হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন দিনাজপুর, বিরল ও ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে বিজিবি ৫০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজীর আহম্মেদ বলেন, ‘আমি খবর পেয়েছি, তবে এটি আমাদের এরিয়ার আওতাভুক্ত নয়। এটি দিনাজপুর ৪২ বিজিবি ক্যাম্পের আওতায় পড়ে।’
তবে দিনাজপুর ক্যাম্পের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে পুনর্বাসন উদ্যোগ জরুরি। পাশাপাশি, দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ বাড়িয়ে এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।