
প্রতীকী ছবি
কক্সবাজারের টেকনাফে চার সন্তানের মা মিনারা বেগমের (৩৫) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বটতলী বাজার এলাকায় নিজের বসতবাড়ি থেকে তার লাশ পুলিশ উদ্ধার করেছে। লাশ উদ্ধারের সময় ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে মিনারা বেগমের গলায় ফাঁস লাগানো ছিল। ঘটনার পর থেকে স্বামী ইব্রাহিম চার সন্তান নিয়ে পলাতক আছেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জহির আহমদ ও টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন।
নিহত মিনারা বেগম উপজেলার প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের পূর্বপাড়ার বাসিন্দা মৃত হাজী আবুল কালামের মেয়ে।
পরিবার সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের মার্চ মাসের শেষের দিকে মিনারা বেগম ও সদর ইউনিয়নের মহেশখালীয়া পাড়ার বাসিন্দা রফিক আহমেদের ছেলে মোহাম্মদ ইব্রাহিমের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে চার ছেলেসন্তানের জন্ম হয়।
স্বামী ইব্রাহিম বিভিন্ন সময় যৌতুক দাবি করে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়তেন। দ্বিতীয় বিয়ের ভয়ও দেখাতেন। কয়েক মাস ধরে ইব্রাহিম বিদেশ যাবে বলে যৌতুকের টাকার চাপ দিতে থাকে। এতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ বেড়ে যায়।
ঘটনার দিন মিনারা বেগম গিয়েছিলেন হেষখালীয়াপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে। সেখান থেকে ফিরে শনিবার রাত ৯টার দিকে নিজের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন। ইব্রাহিম সিলিং ফ্যানের সঙ্গে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে মিনারার বড় ভাই মোহাম্মদ ইলিয়াসকে ফোন করে আত্মহননের ঘটনা জানায়।
ইলিয়াস ও তার আত্মীয়-স্বজন ঘটনাস্থলে পৌঁছে তারা ঘরের দরজার বাইরে থেকে তালাবদ্ধ দেখতে পান। এ সময় ইব্রাহিম তালা খুলে দিয়ে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল এসে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে রাত সাড়ে ১০টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
নিহত মিনারা বেগমের বড় ভাই ইলিয়াস বলেন, ‘ইব্রাহিম যৌতুকের যে টাকা দাবি করেছিল, তা না পেয়ে আমার ছোট বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। ঘটনার পরপর সে চার ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। সন্তানরা তার মৃত মায়ের চেহারা পর্যন্ত দেখতে পায়নি। মিনারাকে হত্যা করে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে ঝুঁলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এই ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।’
অভিযুক্ত স্বামী ইব্রাহিমের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘রাতেই লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ (রবিবার) সকালে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’