Logo
Logo
×

সারাদেশ

জিরুনা ত্রিপুরার মানবিকতায় পাহাড়ে নতুন ইতিহাস

Icon

খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫, ১০:৫৮ পিএম

জিরুনা ত্রিপুরার মানবিকতায় পাহাড়ে নতুন ইতিহাস

ছবি-সংগৃহীত

মানুষের প্রতি ভালোবাসা, রাষ্ট্রীয় দায়িত্ববোধ আর মানবিক চিন্তার অনন্য সমন্বয়ে খাগড়াছড়ির ক্রীড়াবিদ আনাই মগিনীর জীবনে যুক্ত হলো একটি নতুন অধ্যায়। জাতীয় নারী ফুটবল দলের সাবেক সাফ চ্যাম্পিয়ন আনাই মগিনীকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে চাকরি দিয়ে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা।

গত শনিবার দুপুরে জেলা পরিষদ কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আনাই মগিনীর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা। এটি কেবল একটি চাকরি নয়, বরং একজন সংগ্রামী ক্রীড়াবিদের প্রতি জাতির শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রকাশ।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার গোলাবাড়ি ইউনিয়নের সাতভাইয়া পাড়ায় জন্ম নেওয়া আনাই মগিনী শৈশব থেকেই ফুটবলের প্রতি ছিল অগাধ ভালোবাসা। পাহাড়ি কাদা-মাটিতে জাম্বুরা ফল দিয়ে খেলে শুরু হয়েছিল তার পথচলা। সীমিত সুযোগ-সুবিধা, অর্থকষ্ট এবং প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি জায়গা করে নেন জাতীয় দলে।

২০২২ সালের সাফ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে দেশের প্রথম শিরোপা জয়ে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা বলেন, আনাই শুধু একজন ক্রীড়াবিদ নয়, তিনি পাহাড়ের আশা, দেশের গর্ব। এমন মেধাবী ও ত্যাগী খেলোয়াড়ের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই আমরা তাকে চাকরির মাধ্যমে সম্মান জানাচ্ছি। এই নিয়োগের মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে এক নারী নেত্রীর দূরদর্শিতা, মানবিকতা এবং সমাজের প্রতি তার দায়বদ্ধতার স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি। যদিও চাকরিটি আপাতত অস্থায়ী, তবুও এটি আনাইয়ের জন্য একটি বড় অর্জনÑ তার স্বপ্ন, সংগ্রাম ও সাফল্যের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। একই সঙ্গে এটি পাহাড়ের হাজারো মেয়ে ও প্রান্তিক তরুণদের জন্য প্রেরণা, যারা সীমাবদ্ধতার মাঝেও বড় কিছু করতে চায়। আনাইয়ের এই চাকরি প্রমাণ করে, কৃতিত্ব কখনও অদৃশ্য হয় না, সম্মান পায়। সমাজের জন্য এটি একটি বার্তাÑ রাষ্ট্র তার সোনার মেয়েদের মনে রাখে, মর্যাদা দেয়।

আনাইয়ের বাবা রিপ্রু মগ বলেন, আমার মেয়ে ছোটবেলা থেকেই মাঠে দৌড়াত। আজকের এই স্বীকৃতি শুধু আনাই নয়, পুরো পাড়ার মুখ উজ্জ্বল করেছে। মা আপ্রুমা মগিনী বলেন, চাকরির চিঠি হাতে পেয়ে আমি চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি। মেয়ে মানুষ হয়েও এতদূর যাবে, ভাবিনি।

প্রতিবেশীরা জানান, আনাই শুধু একজন খেলোয়াড় নয়, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আশার প্রতীক। এই পাড়ায় জন্ম নিয়ে, সীমিত সুযোগে এত বড় কিছু করা সহজ নয়। তার চাকরি পাওয়া আমাদের সমাজের জন্য বড় এক দৃষ্টান্ত।

ইশা ফাউন্ডেশনের একটি প্রকাশনা

অনুসরণ করুন