ছবি-সংগৃহীত
কক্সবাজারের টেকনাফের গহিন পাহাড় ঘিরে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে অপহৃত একই পরিবারের তিনজনকে উদ্ধার করেছে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার (২মে) রাত ৩টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মোছনী এলাকা থেকে অপহরণ করা হয় এ তিনজনকে। পরে ভোর থেকে পুরো পাহাড় ঘিরে শত শত এলাকাবাসী সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। সকাল ১০টার দিকে পাহাড় থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
টেকনাফের হ্নীলা
ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী এসব তথ্য
নিশ্চিত করেছেন।
অপহৃতরা হলেন- হ্নীলা ইউনিয়নের মোছনী গ্রামের আশরাফ জামানের ছেলে নীর আহমেদ ও হাবিবুর রহমান এবং হাবিবুর
রহমানের ছেলে নুর ফয়েজ।
ইউপি সদস্য মোহাম্মদ
আলী জানান, প্রতিদিনের মতো হ্নীলা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মোছনী গ্রামের বাসিন্দা
নীর আহমেদ, হাবিবুর রহমান ও তার শিশুছেলে নুর ফয়েজ মোছনী নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের
পশ্চিম পাহাড়ের পাদদেশে ধানক্ষেত পাহারা দিচ্ছিলেন। এ সময় রাত ৩টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত
এসে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে। অপহরণের খবর পেয়ে বিক্ষুব্ধ শত শত এলাকাবাসী
পুরো পাহাড় ঘিরে লাঠি হাতে অভিযান শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে আসার একপর্যায়ে
অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা কৌশলে পালিয়ে যায়। সকাল ১০টার দিকে তিনজনকে উদ্ধার করা সম্ভব
হয়েছে।
টেকনাফের হ্নীলা
ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, একের পর এক অপহরণের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী
এখন সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করতে শুরু করেছে। এর জের ধরেই পাহাড়ে এলাকাবাসীর এ অভিযান।
দ্রুতসময়ের মধ্যে তিনজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তিনি এলাকাবাসীকে অপহরণসহ সব অপরাধ
রোধে সংঘবদ্ধ প্রতিরোধ অব্যাহত রাখার আহ্বানও জানান।
টেকনাফ থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি জানান, অপহরণের বিষয়টি জেনে এলাকাবাসী
পুলিশের আগে পাহাড় ঘিরে রাখে। এর মধ্যে পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছে। একপর্যায়ে তিনজনকে
উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। উদ্ধার তিনজন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
তাদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া
চলছে।
ওসি জানান, ইতোমধ্যে পুলিশ অপহরণ রোধে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। অভিযানে গত এক সপ্তাহে অপহরণে জড়িত অন্তত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ২ মে পর্যন্ত টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১২৪ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৬৬ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকিরা রোহিঙ্গা নাগরিক। অপহরণের পরিবারের তথ্য বলছে, অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫৩ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছে।