Logo
Logo
×

সারাদেশ

ঠাকুরগাঁওয়ে হঠাৎ ঝড়ে লন্ডভন্ড ২০ গ্রাম, ৩ জনের মৃত্যু

Icon

ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৪, ০৫:০০ পিএম

ঠাকুরগাঁওয়ে হঠাৎ ঝড়ে লন্ডভন্ড ২০ গ্রাম,  ৩ জনের মৃত্যু

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় হঠাৎ ঝড়ে রাস্তার পাশের উপড়ে পড়া গাছ

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় হঠাৎ ঝড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ঝড়ের কবলে দুই নারী ও বৃষ্টিতে জমে থাকা পানিতে ডুবে আড়াই বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়।  শনিবার (১ জুন) ভোর ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

১৫ মিনিটের ঝড়-বৃষ্টিতে দুই ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। কাঁচা বাড়িঘরের টিনের চালা উড়ে গেছে। গাছ ভেঙে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক পরিবার

নিহতরা হলেন- উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের শালডাঙ্গা গ্রামের পইনুল ইসলামের স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪০), একই গ্রামের দবিরুল ইসলামের স্ত্রী জাহেদা বেগম (৫০) এবং একই উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের লালাপুর নয়াপাড়া গ্রামের নাজমুল ইসলামের আড়াই বছরের ছেলে নাঈম। 

পইনুল ইসলাম বলেন, সকালে ফজরের নামাজ পড়তে গিয়ে মসজিদে থাকা অবস্থায় ঝড় শুরু হয়। বাড়িতে ছুটে এসে স্ত্রীকে খুঁজে না পেয়ে ডাকাডাকি শুরু করি। পরে ঝড়ে উড়ে এসে বারান্দায় পড়া টিন ও ছাউনি সরিয়ে দেখি নিচে চাপা পড়ে আছে স্ত্রী। তাকে উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

পাড়িয়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশের দফাদার আজিজুর রহমান জানান, ঝড়ের সময় বারান্দায় বসে ছিলেন দবিরুল ইসলামের স্ত্রী জাহেদা। মেঘের গর্জন আর ঝড় দেখে বারান্দায়ই মারা যান তিনি।

দবিরুল ইসলাম জানান, তার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে ঝড়ের সময় ভয়ে তিনি স্ট্রোক করেছেন। 

লালাপুর নয়াপাড়া গ্রামের নাজমুল ইসলাম জানান, বাড়ির পাশে গর্তে বৃষ্টির পানি জমে ছিল। খেলতে গিয়ে শিশুটি পড়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজনের নজরে এলে তাকে উদ্ধার করে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝড়ে পাড়িয়া ইউনিয়নের তিলকড়া, শালডাঙ্গা, বঙ্গভিটা, লোহাড়া, বামুনিয়াসহ ১২টি গ্রাম, বড়বাড়ি ইউনিয়নের বেলহাড়া, বেলবাড়ী, বটের হাট, হরিপুরসহ আটটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশির ভাগ কাঁচা বাড়ির টিনের চালা উড়ে গেছে। গাছ ভেঙে পড়েছে ঘরের ওপর। 

বড়বাড়ী ইউনিয়নের আধারদীঘি বাজারে পাঁচটি দোকান ও দুটি হোটেলে গাছ ভেঙে পড়েছে। ঘরের টিন নষ্টসহ সার, কীটনাশক ও সিমেন্ট ব্যবসায়ীদের ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। 


আধাদীঘি বাজারের ব্যবসায়ী হাসান আলী জানান, বাজারে শতবর্ষী কিছু আমগাছ ছিল। ১৫ মিনিটের ঝড়ে সেই গাছের বড় ডাল ভেঙে পড়েছে দোকানের ওপর। এতে দোকানগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। 

বড়বাড়ি ইউনিয়নের আধারদীঘি থেকে হরিণমারী যাওয়ার রাস্তায় গাছ ভেঙে পড়ে যান চলাচল বন্ধ আছে। কয়েকজনকে গাছ কেটে সরিয়ে রাস্তা স্বাভাবিক করতে দেখা গেছে। ঘটনার পর থেকে এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। 

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বালিয়াডাঙ্গী জোনাল অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম জানান, ঝড়ে ৪০টিরও বেশি বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে ও ভেঙে গেছে। এ ছাড়া অনেক স্থানে বৈদ্যুতিক তারের ওপর গাছ ভেঙে পড়েছে। বালিয়াডাঙ্গী বাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। 


বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন সোহেল বলেন, ঝড়ে মরিচ, বোরো ধান, পটলসহ বিভিন্ন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিসংখ্যান সংগ্রহে মাঠ পর্যায়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। 

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফছানা কাওছার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান এবং আমাদের লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে কাজ করছে। 

ইশা ফাউন্ডেশনের একটি প্রকাশনা

অনুসরণ করুন