ক্ষমতার পালাবদলেও বহাল কামালের প্রেতাত্মা আগষ্টিন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০৭:১৮ পিএম
ছবি-সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে রক্তাক্ত জুলাইয়ের পথ ধরে আগস্টে ক্ষমতার পালাবদলের পরও বহাল তবিয়তে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের প্রেতাত্মা খ্যাত আগষ্টিন পিউরিফিকেশন। শেখ হাসিনা সরকারের আশির্বাদে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে আগষ্টিন পিউরিফিকেশন নির্দেশে বাংলাদেশ খ্রিস্টান এসোসিয়েশন বিবৃতি প্রদান করলেও সরকার পতনের পরই তার সকল অপকর্ম ধরা পড়ার ভয়ে আগষ্টিন পিউরিফিকেশন এবং ইম্মানুয়েল বাপ্পি মণ্ডল (সেক্রেটারী দি মেট্টোপলিটান খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ) ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে বিবৃতি দেওয়া শুরু করেছে। রাতারাতি এমন ভোল পাল্টানোয় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন খ্রীষ্টান সম্প্রদায় ও সমবায়ীগণ।
একাধিক সূত্রের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সৃষ্ট গণহত্যায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে একাধিক হত্যা মামলা হয়েছে। একইসাথে কামাল ও ছয়কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট করে ঘুষ ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান শুরু করায় এখন আতঙ্কিত আগষ্টিন। তবে আসাদুজ্জামান খান কামালের প্রেতাত্মা খ্যাত সমবায় মাফিয়া আগষ্টিন পিউরিফিকেশনের বিরুদ্ধে এখনো দুদক অনুসন্ধান শুরু না করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তার দখলে থাকা প্রতিষ্ঠানের খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের অনেকে। কেননা, আগষ্টিন পিউরিফিকেশন হচ্ছেন আসাদুজ্জামান খান কামালের অন্যতম ডোনার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সমবায়ী
জানান, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের
আশ্রয়ে- প্রশ্রয়ে তিনি দু’টি সমবায় প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে দখলে
রেখে কয়েক হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছেন। গাজীপুরের
বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে কিনেছেন জমি। তার অন্যায়কে সমর্থন না করায় খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের
ও সমবায় অঙ্গনের অনেকের ওপর চালিয়েছেন অত্যাচারের স্টীমরোলার। আসাদুজ্জামান খান কামালের
আশির্বাদ থাকায় টঙ্গীর পিছনে পাগাড় নামক এলাকার একসময়ের জমির দালাল আগষ্টিন পিউরিফিকেশন
হয়ে উঠে খ্রীষ্টান ধর্মালম্বদীদের সমবায় অঙ্গনের মূর্তিমান আতংক।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অত্যাচার
নির্যাতনের শিকার খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজন মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
সম্প্রতি জীবন স্নাল ফেসবুকে এক ভিডিও
বার্তায় বলেন, খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৮০০ কোটি আত্মসাতের মুলহোতা
আগষ্টিন যেন দেশ থেকে পালাতে না পারেন। তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
অন্যদিকে এবিষয়ে জ্যাকসন গোমেজ একটি
ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন। পোস্টটি নিজের ফেসবুক টাইম লাইনে শেয়ার করেছেন বাংলাদেশ খ্রীষ্টান
এসোসিয়েশনের সভাপতি আলবার্ট পি. কস্টা।
পোস্টটি হুবহু উপস্থাপন করা হলো-
খ্রীষ্টান সোসাইটির সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, তথাকথিত বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও স্বঘোষিত বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, বাবু মার্কুস, পংকজ গিলবার্ট, আগষ্টিন পিউরিফিকেশন সহ এদের গ্যাং কে বয়কট করুন। বিগত স্বৈরাচার সরকারের মদদপুষ্ট হয়ে এরা অবৈধ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সহযোগিতায় নানা অপকর্ম করেছে। দেশের সর্ববৃহৎ সমবায় সমিতি দি খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড ও দি মেট্রোপলিটন খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি: এবং দি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লীগ অব বাংলাদেশ (কালব) থেকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এছাড়াও বাংলাদেশ খ্রিষ্টান কল্যান ট্রাস্ট এর সমস্ত টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমাদের খ্রিষ্টান কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে সাধারণ খ্রিষ্টভক্তদের পুঁজি করে সরকারি নানাবিধ সুবিধা তারা ভোগ করেছে। এই চক্রের মূল হোতা আগষ্টিন পিউরিফিকেশন। এদের এইসব অপকর্মের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে। বিভিন্ন সমিতি থেকে তাদের সদস্য পদ বাতিল করে। অনেকে জেল খেটেছে। কয়েকজনের মামলা এখনো চলমান আছে। ছাত্র আন্দোলনে বিরুদ্ধে এরা একটা বিবৃতি প্রকাশ করেছে যা আমাদের খ্রিষ্টান কমিউনিটির সাথে সাংঘর্ষিক। এমনকি এরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর জন্য ফেসবুকে বিভিন্ন পেজে এবং গ্রুপে নানা রকম গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তাদের এসব অপকর্মের যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ আমাদের কাছে আছে। খুব শিগগিরই এদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। প্রিয় খ্রিষ্টভক্তগণ, নিজেদের অধিকার ও অর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সচেতন হোন। এদের বয়কট করুন।
এ বিষয়ে আগষ্টিন পিউরিফিকেশন এবং ইম্মানুয়েল বাপ্পির কাছে জানতে তাদের মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।