Logo
Logo
×

সারাদেশ

সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে অভিযোগ

অফিস সহকারী থেকে হয়েছেন উপ-পরিচালক, গড়েছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৩ পিএম

অফিস সহকারী থেকে হয়েছেন উপ-পরিচালক, গড়েছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ

সরদার মাহাবুবুর রহমান, ছবি-সংগৃহীত

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় অধীনে ঢাকা সড়ক পরিবহন ভবনের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (অর্থ) সরদার মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নিতি ও সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে । এমনকি স্ত্রীকে ঠিকাদার সাজিয়ে অবৈধভাবে বানিয়েছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক। নামে বেনামে বিভিন্ন স্থানে গড়েছেন বিপুল সম্পদ।

গত ২২ অক্টোবর (মঙ্গলবার) জনৈক মো. আফতাব উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি উপ-পরিচালক সরদার মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের বিস্তারিত তুলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের সড়ক জনপদ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

নড়াইলের বাসিন্দা আফতাব উদ্দিন তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, পিতার আর্থিক দৈন্যতায় স্থানীয় একটি এতিমখানায় লালিত পালিত সরদার মাহবুবুর রহমান আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী শেখ সেলিমের হাত ধরে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতির পথচলা। বিভিন্ন চতুরতায় পর্যায়ক্রমে শেখ সেলিমের আস্থাভাজন প্রমানকরা সরদার মাহবুবুর রহমান আওয়ামী লীগ সরকারের শুরুতে শেখ সেলিমের সুপারিশে বিআরটিএ অফিসে অফিস সহকারী হিসাবে চাকুরিতে যোগদান করেন। আওয়ামী আমলে অফিস সহকারি পদে যোগদান করে তড়িৎ পদোন্নতি পেয়ে হয়ে যান অর্থ বিভাগের উপ-পরিচালক। অফিস সহকারীর চাকুরি নিয়ে কিভাবে উপ-পরিচালক হলেন এ নিয়ে খোদ বিআরটিএর প্রধান কার্যালয়ের সাধারণ কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যেও রয়েছে কানাঘুষা। তবে নড়াইলের বাসিন্দা হলেও নিজেকে গোপালগঞ্জী ও শেখ সেলিমের লোক পরিচয় দিয়ে বিআরটিএ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন গত আওয়ামী লীগ শাসনামলে, এখনও রয়েছে বহাল তবিয়তে।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, মাহবুবুর রহমান চাকুরি পাওয়ার পর রাজনৈতিক ব্যানারকে ব্যবহার করে জড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম দুর্নীতিতে। তিনি বিআরটিএ প্রধান কার্যালয়ে শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত চাকুরির সুবাদে সারাদেশে বিআরটিএ তকবির বাণিজ্য, ঘুষ দুর্নীতি এমনকি অফিসের সরকারি অর্থ কিভাবে আত্মসাৎ করা যায় সেই ফাঁদ তিনি পাতিয়ে অবৈধভাবে সরকারি কোষাগার থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার এসব  অবৈধ সম্পদের বৈধতায় কোন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পরিচালনার যোগ্যতা অভিজ্ঞতা না থাকলেও স্ত্রীকে বানিয়েছেন ঠিকাদার। আওয়ামী সরকারের শাসনামলে নিজেকে গোপালগঞ্জের বাসিন্দা পরিচয় দিলেও তার বাড়ি নড়াইল সদর উপজেলার সোগানিয়া গ্রামে। তার পিতার নাম আব্দুর রাশেদ সরদার।

আরও উল্লেখ করেন, উপ পরিচালক (অর্থ) সরদার মাহবুবুর রহমান ও তার স্ত্রীর নামে কয়েকটি বাড়ি ও ফ্ল্যাট রয়েছে। বিবরণে বাসা- ১৯/সি/২ উত্তর টোলারবাগ, দারুসসালাম মিরপুরের বাড়িটি মাহাবুর রহমানের স্ত্রীর নামে। ধানমন্ডির জিগাতলা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট সহ নড়াইলে তার স্ত্রীর নামে ৫ম তলা একটি বাড়ি তৈরীতে কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। মোহাম্মদপুর জাপান গার্ডেন সিটির সামনে ৫ নম্বর রোডে ৭৬ নম্বর বাড়িটির ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় তার স্ত্রীর নামে রয়েছে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা মূল্যের আলিশান ফ্ল্যাট। রাজধানীর উত্তরার ১৫ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর রোডের ২২ নম্বরের প্লটটি তার স্ত্রীকে ৪কোটি ৩০ লাখ টাকা দিয়ে কিনে উপহার দিয়েছেন। রয়েছে উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টর সহ দক্ষিনখানে প্লট। তাছাড়াও মাহবুবুর রহমান তার স্ত্রীর নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে কয়েক কোটি টাকা জমা করেছে। মাহবুবুর রহমান ও তার পরিবারের দুইটি প্রাইভেটকার তিনটি মাইক্রোবাস ও চারটি বাস রয়েছে।

উপদেষ্টার দপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছেন, একজন অভিযোগ কারীর লিখিত একটি অভিযোগ গত ২২ অক্টোবর উপদেষ্টা বরাবর পাঠিয়েছেন। আবেদিত বিষয়ে সরদার মাহবুবুর রহমান অনিয়ম দুর্নীতি ও সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ সহ তার স্ত্রীকে ঠিকাদার বানিয়ে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা লোপাট সহ নামে বেনামে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের অনুসন্ধান করবে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা দপ্তর ও দুদক।

অভিযোগের বিষয়ে উপ-পরিচালক (অর্থ) সরদার মাহবুবুর রহমানের বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করেছে সব অভিযোগই মিথ্যা। হয়তো কেউ আমার মান-সম্মান নষ্ট করার জন্য এই অভিযোগটি করেছেন, এর বেশি এ অভিযোগ সম্পর্কে কোন বক্তব্য নাই।’

তবে অভিযোগকারীর অভিযোগ, প্রদত্ত অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিআরটিএর উপ-পরিচালক (অর্থ) সরদার মাহবুবুর রহমানের সকল অপকর্মের সবকিছু বেরিয়ে আসবে।

 

ইশা ফাউন্ডেশনের একটি প্রকাশনা

অনুসরণ করুন