অর্থ উপদেষ্টা বরাবর অভিযোগ
অনিয়ম-দুর্নীতিতে সুপারভাইজার আব্দুর রহমান গড়েছেন সম্পদের পাহাড়
নিজস্ব সংবাদদাতা
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৮ পিএম
ছবি- আব্দুর রহমান খানের নির্মাণাধীন বাড়ী। ইনসেটে সুপারভাইজার আব্দুর রহমান খান
ঢাকার উত্তরা কর অঞ্চল -৯ এর সুপারভাইজারের পদে কর্মরত আব্দুর রহমানের রয়েছে সম্পদের পাহাড়। গড়েছেন ৬তলা বাড়ী সহ কিনেছেন বিভিন্নসহ এলাকার ফ্ল্যাট, জমি। অভিযোগ রয়েছে অবৈধভাবে করদাতাদেরকে হয়রানি ও দুর্নীতি অনিয়ম করে এমন অঢেল সম্পদের মালিক সুপারভাইজার আব্দুর রহমান খান।
গত ১৭ নভেম্বর জনৈক হাফিজুর রহমান নামের এক ব্যক্তি লিখিতভাবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে দুটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন উত্তরার কর অঞ্চল - ৯ এর ওইসব সার্কেলে করদাতাদের হয়রানিও সুকৌশলী তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন সুপারভাইজার আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত সিন্ডিকেটটি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর অঞ্চল-৯ উত্তরা কর অফিসের সুপারভাইজার আব্দুর রহমান খান বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার রৌহাদহ গ্রামের আব্দুর রশিদ খানের ছেলে। বর্তমানে উত্তরার উত্তরখানের ৩ নম্বর রোডের ১০ নম্বর বাসা (আশরাফুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও মসজিদের পাশে মাজারপাড়া বিডিআর বিল্ডিং গলি) তে। তার টিন নাম্বার ৫৪৮০ ৬৯ ৭০ ৬০ ১৯।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে দাখিলকৃত হাফিজুর রহমান নামের ওই ব্যক্তির অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সুপারভাইজার আব্দুর রহমান খান তার সিন্ডিকেট বাহিনী দিয়ে অবৈধভাবে করদাতাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে উত্তরার উত্তরখানে ছয় তলা বাড়ি ও বগুড়ায় নিজ গ্রামের বাড়িতে ছয় তলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। উত্তরায় বিভিন্নসহ এলাকার ফ্ল্যাট, জমি কিনেছেন।
অভিযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে করদাতাদের বিভিন্ন ধরনের প্যাঁচে ফেলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় সুপারভাইজার আব্দুর রহমান খান। তার সিন্ডিকেটের সদস্য দিয়ে আয়কর দাতাদের হয়রানি করার জন্য নথি ভুলের অজুহাতে তাদের কাছে ফোন করে। এইজন্য আপনাদের কাছে নোটিশ পাঠানো হবে, আপনারা যদি টাকা দেন তাহলে নথির ঠিক করে দিব জানান দেন। করদাতারা টাকা দিতে অস্বীকার করলে তার লালিত সিন্ডিকেটের সদস্যদের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হয়রানি করা হয়। শুধু তাই নয় অনেক সময় করদাতাদের আয়কর ফাইলটি বাক্সবন্দী অথবা গায়েব করেও দেয়া হয়।
তার এহেন অপকর্মের চর্চা খোদ তার অফিসের সহকর্মীদের চায়ের আড্ডাতেও চলে। সবারই এক প্রশ্ন ছোট একটি চাকুরি করে কিভাবে এত সম্পত্তির মালিক হইলেন আব্দুর রহমান। আর কেনইবা তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
হাফিজুর রহমান নামের ওই ব্যক্তি অভিযোগে উল্লেখ করেন, করদাতাদের বিভিন্ন ধরনের ভয় ভীতি ও মামলা দিয়ে জেলে ঢোকানোর হুমকি-ধমকসহ তার অপকর্মের শেষ নেই। তার কাছে মনে হয় দুর্নীতির, ঘুষ বাণিজ্য ও করদাতাদের হয়রানি করে টাকা আদায়ই তার পেশা। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হলেও এত অর্থ সম্পদের মালিক কিভাবে হলেন প্রশ্নটি তার নিজ গ্রামের বাসিন্দাদেও। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চাকুরি নিয়ে চোখের পলকে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির পাহাড় গড়ার কোন বিচার হবে না, এসব দেখার কি কেউ নাই।
অভিযোগ বিষয়ে অভিযুক্ত কর সুপারভাইজার আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমরা ছোটখাটো চাকুরি করি, আমাদের এত সম্পদ নেই। আমাকে হয়রানি করার জন্য এসব অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।’
অভিযোগকারী হাফিজুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করলে সুপারভাইজার আব্দুর রহমান খানের সকল ঘুষ দুর্নীতি ও অনিয়মে গড়া সম্পত্তির পাহাড় সহ তার নেতৃত্বে পরিচালিত সিন্ডিকেটের মুখোশ দেশবাসীর কাছে উন্মোচিত হবে।