
ছবি-সংগৃহীত
ঢাকাই চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী, পরিচালক ও রাজনীতিবিদ সারাহ বেগম কবরীর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। গত ২০২১ সালের এই দিনের প্রথম প্রহরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ঢাকাই সিনেমার ‘মিষ্টি মেয়ে’ খ্যাত অভিনেত্রী। করেনায় আক্রান্ত অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
বাংলাদেশি সিনেমার এই মহাতারকার জন্ম ১৯৫২ সালের ১৯ জুলাই। বাবা কৃষ্ণদাস পাল। মা লাবণ্য প্রভা পাল। তার বাবার দুই বিয়ে। ছোট স্ত্রীর দ্বিতীয় মেয়ে মিনা পাল (কবরী)। সৎ মায়ের দুই মেয়ে, দুই ছেলে। ছোট মায়ের পাঁচ ছেলে, চার মেয়ে। বিশাল পরিবার হলেও কবরী নিজেকে খুব অল্প বয়সেই আলাদা করেছেন- নিজ গুণে। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে উঠেছিলেন তিনি। কাজ করেন টেলিভিশনে। এরপর দ্রুত সময়ে যুক্ত হন চলচ্চিত্রে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশ্ব জনমত গঠনে তিনি বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।
একসময়ের মিনা পাল কবরী নামে ১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ সিনেমার মধ্য দিয়ে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর উর্দু ভাষার ‘বাহানা’ ও ‘সোয়ে নদীয়া জাগে পানি’ এবং লোককাহিনিনির্ভর ‘সাত ভাই চম্পা’ দিয়ে সফলতা অর্জন করেন। ‘আবির্ভাব’ চলচ্চিত্র দিয়ে রাজ্জাকের সঙ্গে তাঁর জুটি গড়ে ওঠে।
‘সারেং বৌ’-এর নবিতুন চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন।
এ ছাড়া তিনি ‘সুজন সখী’ ও ‘দুই জীবন’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য আরো দুটি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন। তার অভিনীত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ও ‘সাত ভাই চম্পা’ চলচ্চিত্র দুটি ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সেরা ১০ বাংলাদেশি চলচ্চিত্র তালিকায় যথাক্রমে প্রথম ও দশম স্থান লাভ করে।
৫০ বছরের বেশি সময় চলচ্চিত্রে রাজ্জাক, ফারুক, সোহেল রানা, উজ্জ্বল, জাফর ইকবাল ও বুলবুল আহমেদের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন এই অভিনেত্রী। ঢাকার চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় জুটি ছিলেন রাজ্জাক-কবরী।
কবরী শেষ জীবনে একাধারে ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক ও রাজনীতিক। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। যুক্ত ছিলেন অসংখ্য নারী অধিকার ও সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে।