সোহেল রানা অধ্যায়ের সমাপ্তি, অভিমানে অবসরে...

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৪ পিএম

ছবি-সংগৃহীত
বাংলা সিনেমায় সোহেল রানা অধ্যায়ের সমাপ্তি। এক প্রকার অভিমানে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন অভিনেতা-প্রযোজক-রাজনীতিক সোহেল রানা। শুধু অভিনয় বা সিনেমা থেকে এই অবসর নয়, রাজনীতি থেকেও নিজেকে একেবারে গুটিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
৭৯ বছর বয়সী এই চলচ্চিত্র কিংবদন্তি গণমাধ্যমে বলেন, ‘১৯৭৩ সালে অভিনেতা হিসেবে যাত্রা শুরু করি। বর্তমানে বয়স ও শারীরিক কারণে আর আগের মতো কাজ সম্ভব হচ্ছে না। তাই অভিনয় ও রাজনীতি— দুই ক্ষেত্র থেকেই বিদায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’ প্রযোজনা করে ১৯৭২ সালে শোবিজে পা রাখেন মাসুদ পারভেজ ওরফে সোহেল রানা। ১৯৭৪ সালে ‘মাসুদ রানা’ সিনেমার মাধ্যমে অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে প্রায় তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
শুধু বয়স নয়, অভিনয় থেকে অবসরের কারণ আরও রয়েছে এই অভিনেতার যুক্তিতে। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যে ধরনের চরিত্র লেখা হয়, তাতে আমাদের মতো শিল্পীদের জায়গা নেই। বিদেশি সিনেমায় বয়সী শিল্পীদের জন্য আলাদা করে চরিত্র তৈরি হয়, আমাদের দেশে তা হয় না।’
এসব নিয়ে তার ভেতরে জমেছে আক্ষেপের ঘন স্তর আর অভিমান। তার ভাষায়, ‘চলচ্চিত্রজগৎ তো এখন শেষ। এখন দু-চারজন যারা করছে, তাদের সঙ্গে আমাদের প্রজন্মের মিলছে না। যেভাবে আমাদের ব্যবহার করার কথা, তেমন উপযুক্ততা তাদের নেই। বিদেশি সিনেমায় দেখি, আমাদের বয়সের শিল্পীরা দিব্যি কাজ করছেন। তাদের জন্য আলাদাভাবে চরিত্র ও গল্প লেখা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে সে রকম কিছু হচ্ছে না। আমাদের এখানে শিল্পীদের বয়স হয়ে গেলে শুধু বাবা-মা, চাচাদের ক্যারেক্টার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পারফর্ম করার সুযোগ থাকলে এ ধরনের চরিত্রে অভিনয় করা কোনও সমস্যা নয়। কিন্তু তা না হলে তো অভিনয়ের মানে হয় না। আমি সেই জায়গায় থেকেই চলে যেতে চাই।’
সোহেল রানা শেষ অভিনয় করেন ‘মধ্যবিত্ত’ নামে একটি সিনেমায়, যা চলতি বছরের জানুয়ারিতে মুক্তি পায়।
অভিনয়-প্রযোজনার বাইরে সোহেল রানার রয়েছে রাজনৈতিক পরিচয়ও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। পরে তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিতে (জাপা) যোগ দেন। ২০০৯ সালে তিনি জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য হন। ২০২০ সালে সোহেল রানা জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করেন। তবে ২০২২ সালের অক্টোবরে তিনি জাতীয় পার্টির প্রধান রওশন এরশাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পুনরায় দলটিতে যোগ দেন এবং কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।