Logo
Logo
×

স্বাস্থ্য

যেন অভিভাবকহীন চলছে মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০১ পিএম

যেন অভিভাবকহীন চলছে মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট

প্রতীকী ছবি

পরিচালক ও উপপরিচালক শূন্যতায় একাডেমিক কার্যক্রম স্থবির ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের। নিরাপত্তাও পড়েছে হুমকির মুখে। প্রধান দুটি পদের শুণ্যতায় যেন অভিভাবকহীন চলছে জাতীয় মানিসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে বিভিন্ন দাবীতে প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়মিত চলছে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচী।

জানা গেছে, গত ২৩ অক্টোবর থেকে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অবসরে যাওয়ায় এই পদটি শূন্য রয়েছে। এর আগে সাবেক উপ পরিচালককে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত ১ সেপ্টেম্বর ওএসডি করে মহাখালীতে ন্যস্ত করে। শীর্ষ দুইটি প্রশাসনিক পদ-ই শূন্য থাকায় যেন মুখ থুবড়ে পড়েছে হাসপাতালটির প্রশাসনিক কার্যক্রম, ব্যাহত হচ্ছে রোগীর সেবা।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে তৈরি প্রতিষ্ঠান ও কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি। এটি ঢাকার একমাত্র সরকারি মানসিক হাসপাতাল ও মানসিক স্বাস্থ্য সংগঠন। ১৯৮১ সালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের একটি মানসিক স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯৮৬ সালে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। প্রথমে ৫০ শয্যার প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ হয় মানসিক স্বাস্থ্য ও গবেষণা ইনস্টিটিউট। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা পরিবর্তন করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে আনা হয়। ২০০১ সালে ঢাকা মহানগরীর শেরে-ই-বাংলা নগরে যাত্রা শুরু করে। প্রায় তিন শতাধিক ডাক্তার এবং সহায়ক স্বাস্থ্য সেবাকর্মীর সেবাযজ্ঞ্যে প্রতিষ্ঠানের আট তলা ভবনটিতে একসাথে ৪০০ শতাধিক ভর্তি রোগীর সেবা প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ডা. অভ্র দাস ভৌমিক সদ্য পতিত আওয়ামী সরকারের সহযোগী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থানের অভিযোগে গত ৫ আগস্টের পর থেকেই হাসপাতালটিতে অস্থিরতা ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। ৬ আগস্ট জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন কক্ষ ভাংচুর এবং ল্যাপটপ সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি করে দুর্বৃত্তরা। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে যাওয়ার পর বিগত সরকারের আমলে করা অনিয়ম-দুর্নিতি তদন্তে ডা. মোহাম্মদ সফিকুল কবিরকে উপপরিচালক হিসাবে এই প্রতিষ্ঠানে পদায়ন করা হলেও তদন্ত রিপোর্ট দেয়ার আগেই গত ১ সেপ্টেম্বর ওএসডি করা হয়। ১২ সেপ্টেম্বর মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে পরিচালক নিয়োগ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অধ্যাপক ডা.আব্দুল্লাহ আল মামুন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসাবে কর্মরত ছিলেন। এদিকে গত ২২ অক্টোবর থেকে অধ্যাপক ডা.আব্দুল্লাহ আল মামুন অবসরে চলে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে শুণ্যতা।

এর মধ্যে হাসপাতালের চারজন চিকিৎসককে আগের সরকারের আমলের সুবিধাভোগী দাবী করে তাদের বদলীর দাবীতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ও কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসাবে পরিচয় দানকারী একজন ওএসডি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এবং বহিরাগতমুক্ত হাসপাতালের দাবীতে চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে অবস্থান ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন। সব মিলিয়ে ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক, শিক্ষা ও চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকারী সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মোন্তাসির মারুফ জানান, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে পরিচালক ও উপপরিচালকের শূন্য পদ পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

 

ইশা ফাউন্ডেশনের একটি প্রকাশনা

অনুসরণ করুন