ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন মাসুদ পেজেশকিয়ান
সমাচার প্রতিদিন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০৫:০০ পিএম
ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। ছবি : সংগৃহীত
ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন মাসুদ পেজেশিকিয়ান। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাঈদ জলিলিকে পরাজিত করে এই বিজয় অর্জন করেছেন তিনি। শনিবার (৬ জুলাই) দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ কথা জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়টি বলেছে, ‘শুক্রবার সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়ে পেজেশকিয়ান ইরানের পরবর্তী প্রেসিডেন্টন হয়েছেন।’
এ নির্বাচনে পেজেশকিয়ানের সঙ্গে তার প্রতিদ্বন্দ্বী কট্টরপন্থী সাবেক পরমাণু আলোচক সাঈদ জালিলির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। এই জয়ের মধ্যে দিয়ে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পূর্বসূরী প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন পেজেশকিয়ান।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, দেশটির কর্তৃপক্ষের দেওয়া ভোট গণনায় শুক্রবারের নির্বাচনের পর ১ কোটি ৩৫ লাখ ভোট পেয়েছেন জালিলি। তার বিপরীতে ১ কোটি ৬৩ লাখ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন পেজেশকিয়ান।
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, পেজেশকিয়ানের সমর্থকরা শনিবার ভোরে আলো ফোটার আগেই বিজয় উদ্যাপন করতে তেহরান ও অন্যান্য শহরের রাস্তায় নেমে আসে।
গত মে মাসের শেষের দিকে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যু হওয়ায় দেশটিতে এ আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। ২৮ জুন আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে এ যাবৎকালের সবচেয়ে কম সংখ্যক ভোটার অংশগ্রহণ করেন। ওইদিন ৬০ শতাংশেরও বেশি ভোটার আগাম নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন। আর দ্বিতীয় ও শেষ দফার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় ৫ জুলাই। এবারের নির্বাচনে মোট প্রার্থী ছিলেন ৬ জন। এরা হলেন- মোস্তফা পুরমোহাম্মাদী, সাঈদ জালিলি, মোহাম্মদ বাকের কলিবফ, আলী রেজা যাকানি, সাইয়্যেদ আমির হোসেন কাজীজাদেহ হাশেমি ও মাসুদ পেজেশকিয়ান।
নির্বাচনে লড়াই হয়েছে মূলত সাঈদ জালিলি ও মাসুদ পেজেশকিয়ানের মধ্যে। ইরানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে জালিলি কট্টরপন্থি এবং মাসুদ সংস্কারপন্থি রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত। তবে উভয়েই দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ।
শুক্রবার (৫ জুলাই) ভোটের পর নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফলাফল থেকে জানা গেছে, মাসুদ পেজেশকিয়ান পেয়েছেন ১ কোটি ৬৩ লাখ ভোট এবং সাঈদ জলিলি পেয়েছেন ১ কোটি ৩৫ লাখ ভোট।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, পেজেশকিয়ানের এ বিজয়ের মধ্য দিয়ে দেশটিতে একটি বাস্তববাদী পররাষ্ট্রনীতি প্রসারিত হতে পারে। ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি নিয়ে বৃহৎ শক্তিগুলোর সঙ্গে আলোচনা স্থগিত হয়ে আছে। সে চুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত করতে স্থগিত আলোচনায় উত্তেজনা প্রশমিত হতে পারে । ইরানে সামাজিক উদারীকরণ ও রাজনৈতিক বহুত্ববাদের সম্ভাবনা বাড়তে পারে।
ইরানের প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা অন্যান্য দেশের প্রেসিডেন্সিয়াল সরকারের মতো নয়। দেশটির ক্ষমতা কাঠামোর শীর্ষে অবস্থান করেন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা। প্রেসিডেন্ট মূলত তার প্রধান সহকারী। তবে সর্বোচ্চ নেতার উত্তরাধিকারী বাছাই সম্পর্কিত যে রাষ্ট্রীয় কমিটি রয়েছে, পদাধিকার বলে সেই কমিটির প্রধান সদস্য প্রেসিডেন্ট।
সূত্র: আলজাজিরা, রয়টার্স