নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে শুরুর একাদশে রাখেননি কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। তাই অধিনায়কত্বের বাহুবন্ধনী থাকে তপু বর্মণের কাছে। বাহুবন্ধনী যাঁর হাতেই থাকুক, সবার চোখ তো ছিল হামজা চৌধুরীর দিকে। পুরো ৯০ মিনিট জুড়েই বাংলাদেশের খেলার কলকাঠি নেড়েছেন তিনি। কখনো উপরে উঠে, কখনো নিচে নেমে, দলের প্রয়োজনে সবটুকু উজাড় করে দিয়ে খেলেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা এই ফুটবলার। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে তাঁর অভিষেক জয়ে রাঙাতে পারেনি বাংলাদেশ।

উন্মাদনার তুঙ্গে থাকা এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি ইতি টানে ০-০ ব্যবধানের ড্রয়ে। এতে অবশ্য বাংলাদেশেরই দায় বেশি। কেননা শিলংয়ের জওহরলার নেহরু স্টেডিয়ামের গোল মিসের পশরা সাজিয়ে বসে কাবরেরা দল। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অন্তুত পাঁচটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে।

ম্যাচের ১৫ সেকেন্ডেই গোলের সুবর্ণ এক সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি মজিবর রহমান জনি। ১২ তম মিনিটে আরও একটি সুবর্ণ সুযোগ আসে বাংলাদেশের জন্য। এবারও ভুলটি ভারতীয় গোলরক্ষকের। তার নেওয়া শট শাকিল তপুর গায়ে লাগায় ডি-বক্সের মধ্যেই ফিরে আসে বল। আরও একবার ফাঁকাপোস্ট পায় বাংলাদেশ। কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেননি মোহাম্মদ হৃদয়। তাঁর নেওয়া দুর্বল শট সহজেই ক্লিয়ার করেন শুভাশিষ বোস।

১৮ মিনিটে শেখ মোরসালিনের ক্রসে শাহরিয়ার ইমন আরেকটু ওপরে ওঠে মাথা ছোঁয়াতে পারলেই গোলের উল্লাসে মাতত বাংলাদেশ। কিন্তু এবারও সঙ্গী হয় দুর্ভাগ্য। 

ভারত প্রথম গোলমুখে শট নেয় ২৮ তম মিনিটে। তবে লিস্টন কোলাসোর শট জায়গায় দাঁড়িয়ে তালুবন্দী করেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক মিতুল মারমা। এরপর আরও আগ্রাসী হতে থাকে ভারত। ৩০ তম মিনিটে উদন্ত সিংয়ের হেড প্রতিহত করেন তারিক কাজী। ফিরতি বলে সুযোগ এসেছিল ফারুকের সামনেও। তবে তাঁর শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন মিতুল।

৪১ তম মিনিটে আবারও হতাশ করেন জনি। শুভাশিষ ও সন্দেশ ঝিঙ্ঘনকে পেছনে ফেলে দৌড়ে ডিবক্সের সামনে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু গোলরক্ষকে একা পেয়েও পরাস্ত করতে পারেননি এই মিডফিল্ডার।

৬১ মিনিটে আবারও ভুল পাসের কারণে সুযোগ আসে জনির সামনে। কিন্তু ব্যর্থতার ধারা বজায় রাখেন তিনি। ডিবক্সে গিয়ে হারিয়ে ফেলেন বল। ৭৫ তম মিনিটে ফাহিম রাকিবের পাঠানো ক্রসকে জালে না পাঠিয়ে উল্টো আকাশে মেরেছেন।

৮৪ তম মিনিটে মহেশ সিংয়ের ক্রস শেষ একটি সুযোগ পেয়েছিলেন ছেত্রী। কিন্তু তাঁর দুর্বল হেড পোস্টের অনেকটা বাইরে দিয়েই চলে যায়। ৮৯ তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ফাহিমের দারুণ একটি শট ভারতীয় গোলরক্ষক যদি ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন। ম্যাচের যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে আবারও সুযোগ পায় বাংলাদেশ। কিন্তু রাকিব বল আকাশে না পাঠালে গল্পটা অন্যরকম হতে পারত। আপাতত প্রাপ্তি কেবল এক পয়েন্ট।

বাংলাদেশ একাদশ: মিতুল মারমা (গোলরক্ষক), তপু বর্মণ (অধিনায়ক), তারিক কাজী, শাকিল তপু, সাদ উদ্দিন, মোহাম্মদ হৃদয়, মজিবর রহমান জনি, হামজা চৌধুরী, রাকিব হোসেন, শেখ মোরসালিন, শাহরিয়ার ইমন।

ভারত একাদশ: বিশাল কাইথ (গোলরক্ষক), রাহুল ভেকে, শুভাশিষ বোস, সন্দেশ ঝিঙ্ঘন (অধিনায়ক), লিস্টন কোলাসো, ফারুক চৌধুরী, উদন্ত সিং, সুনীল ছেত্রী, আয়ুশ ছেত্রী, আপুইয়া রালতে, বরিস সিং।