Logo
Logo
×

জাতীয়

সংস্কার-বিচার নিশ্চিত করেই নির্বাচন

Icon

সমাচার প্রতিদিন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১৩ পিএম

সংস্কার-বিচার নিশ্চিত করেই নির্বাচন

ছবি-সংগৃহীত

সংস্কার ও বিচার নিশ্চিত করেই নির্বাচন দিতে হবে, তবে অতিরিক্ত সময় যেন না নেয় এই বিষয়ে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, নির্বাচন এমনভাবে করতে হবে, যেন কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের ইইউ সফর উপলক্ষ্যে হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

জামায়াত আমির সফরের ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন, সম্প্রতি বেলজিয়ামে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ইউরোপিয়ান কমিশন, ইউরোপিয়ান কাউন্সিল এবং বেলজিয়াম সরকারের বিভিন্ন কোর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জামায়েতের একটি টিম সাক্ষাৎ করেছেন। গত ৪ এপ্রিল এই সফর শুরু হয়। ব্রাসেলসে এই সফর আমরা শেষ করেছিলাম গত ১০ এপ্রিল। এরপর সেখান থেকে আমরা ইউকে(ইংল্যান্ড) যাই। ১৩ তারিখ আমি দেশে ফিরে আসি। এ সফরে আমার সঙ্গে ছিলেন দলের নায়েবে আমির সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। লন্ডন থেকে আরও দুজন সহকর্মী আমাদের টিমে যোগদান করেন। তারা হলেন, আইনজীবী ও ইউরোপে আমাদের মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর সিদ্দিক মোল্লা ও ব্যারিস্টার মাহবুবুল আলম। এই সফরে সঙ্গী হয়েছিলেন জামায়াত আমিরের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজার প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান চৌধুরী।

জামায়াত আমির বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল, সভ্য, আধুনিক এই বিশ্বের অন্যতম উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র ইউরোপের সঙ্গে আমাদের দেশের সম্পর্ককে ঘনিষ্ঠ করা। নতুন বাংলাদেশের এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সম্পর্ককে সামনে এগিয়ে নেওয়া। অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাতে বিরামহীন চেষ্টা চালানো। আমি মনে করি এই সফর শুধু আমাদের জন্যই নয়, জাতির জন্য দেশের জন্য প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, একটি দায়িত্বশীল ইসলামী রাজনীতির দল হিসেবে মূল উপপাদ্য হচ্ছে জনগণের কল্যাণ ও দেশের সার্বভৌমত্ব স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ণ রাখা। এ সফরে আমরা ছয়টি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অন্য আলোচনা করেছি। 

এর মধ্যে প্রথম বিষয় ছিল, গণতন্ত্রকে সংহত ও টেকসই করা। এ ব্যাপারে আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ ও অংশীজন দেশগুলো আছে তারা তাদের দেশের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমাদের কী সহযোগিতা করতে পারে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের ব্যাবসা-বাণিজ্য, বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম, লেবার এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম নিয়ে আমাদের সঙ্গে জড়িত। এক্ষেত্রে আমরা তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা চেয়েছি। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলো পিআর পদ্ধতি নির্বাচন করে থাকেন, নির্বাচনের সেই সিস্টেমগুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

তারা তাদের দেশের অবস্থান থেকে আমাদের দেশের অবস্থা জানতে চেয়েছেন, সেগুলো আমরা শেয়ার করেছি। 

জামায়াত আমির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য দেশে একটি ইকোনমিক ড্রোন তৈরি করা হয়। তাতে করে একটা ভালো পরিবেশ তৈরি হবে। এটা আলোচনার মাধ্যমে সেটেল করা সম্ভব, এটা চলমান প্রক্রিয়া। অবশ্যই, এ ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্যাপক উৎসাহ প্রকাশ করেছে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এই সফরে আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, বাংলাদেশের নির্বাচন কখন হবে, কীভাবে হবে। আমরা বলেছি, অনেক ত্যাগ ও চেষ্টার বিনিময়ে বাংলাদেশে যে পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তনের দাবি, তিনটা ম্যান্ডেটরি পরিবর্তন। প্রথমত : দৃশ্যমান গ্রহণযোগ্য মৌলিক সংস্কার। এই সংস্কার কীভাবে হবে তা আমরা কিছু বিষয় পরিষ্কার করেছি। আমাদের সুনির্দিষ্ট উপস্থাপনা আমরা সংশ্লিষ্ট কমিশনে জমা দিয়েছি। আমরা বলেছি, এই মৌলিক সংস্কারগুলো না করে নির্বাচন হলে এই এই নির্বাচন গণতন্ত্রে কোনো ভিত্তি রচনা করতে পারবে না। কারণ অতীতে দেশ জাতির কাছে বিশ্বের কাছে মোটেও গ্রহণযোগ্য হয়নি, সেরকম হয়ত আরেকটি খারাপ নির্বাচন হবে, আমরা ওই খারাপ নির্বাচন চাই না।

দ্বিতীয়ত, যারা নিহত আহত হয়েছে। খুনের দায় যাদের, তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃশ্যমান বিচার জাতিকে দেখাতে হবে। তাতে করে আস্থা ফিরে আসে যে খুনিদের বিচার হয়, অপরাধীদের বিচার হয়। শহীদ পরিবারগুলো যেন অন্তত স্বস্তি পায়, শহীদের আত্মা যেন প্রশান্তি পায় যে, এ দেশের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। এজন্য আমরা দৃশ্যমান ন্যায়বিচার দেখতে চাই।

তৃতীয়ত, যেটা হতেই হবে, সেটা হচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলোকে পরস্পর শ্রদ্ধা করা সম্মান করা পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আমি জিতে গেলে নির্বাচন সুষ্ঠু, আর হেরে গেলে দুষ্ট  এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তবে নির্বাচনটা এমন হতে হবে, যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে। এজন্য এখন এখানে অনেক ডায়ালগ এর প্রয়োজন আছে। এটি সরকারের তরফ থেকে হতে পারে, রাজনৈতিক দলগুলোর নিজস্ব উদ্যোগে করতে পারে। সিভিল সোসাইটির অনেক দায়িত্ব আছে তারাও দেশ জাতির স্বার্থে করতে পারে। মাল্টিপল জায়গা থেকে এই চেষ্টা হলে তখন একটা পরিবেশ তৈরি হবে।

সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন দলটির সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, দলের নায়েবে আমির অধ্যপক মুজিবুর রহমান, আ ন ম শামসুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটি এম মাসুম, রফিকুল ইসলাম খান, হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আব্দুল হালিম, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, অধ্যাপক ইজ্জত উল্লাহ, নুরুল ইসলাম বুলবুল, মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

ইশা ফাউন্ডেশনের একটি প্রকাশনা

অনুসরণ করুন