ছবি-সংগৃহীত
ঘূর্ণিঝড় রিমাল চলে গেলেও পটুয়াখালীর উপকূলজুড়ে রেখে গেছে তার ক্ষতচিহ্ন। উপড়ে ফেলেছে কয়েক হাজার গাছপালা। ভেঙে গেছে প্রায় সহস্রাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি। ভাসিয়ে নিয়ে গেছে কয়েক শ ঘের-পুকুরের মাছ। জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত করেছে অন্তত ৩০ গ্রাম।
রিমালের প্রভাবে উপকূল জুড়ে এখনো চলছে ঝড়ো বৃষ্টির সঙ্গে থেমে থেমে দমকা হাওয়া। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ পুনর্বাসন কিংবা পুনরুদ্ধারে করতে পারছে না কোনো কাজ। প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে মাঠে কাজ করছে পটুয়াখালী জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। আজ বিকেলে জানা যাবে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ।
রিমাল গতকাল রাত দেড়টায় পটুয়াখালীর উপকূলে আঘাত হানলেও তাণ্ডব শুরু করে রবিবার সন্ধ্যার পর থেকেই। ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগের বাতাসের গতিতে ভেঙে আর উপড়ে ফেলতে থাকে গাছপালা। স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হয় বেড়িবাঁধের বাইরে নিম্নাঞ্চল, চরাঞ্চল। রাংগাবালীর চরমোন্তাজে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় ৩টি গ্রামসহ ৮টি দ্বীপ গ্রাম। কলাপাড়ার নীলগঞ্জের পূর্ব গৈয়াতলা, নীচকাটা, দরিয়ারপুরে বাঁধ ভেঙে এবং একই ইউনিয়নের জালালপুরে বেড়িবাঁধ গড়িয়ে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে ১৬টি গ্রাম। রাংগাবালী উপজেলা প্রশাসন বাঁধ বিধ্বস্ত এলাকার মানুষ সরিয়ে নিলেও পানিবন্দি হয়েছে পড়েছেন কলাপাড়ার ৯ হাজার মানুষ।
গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জেল হোসাইন জানান, বিভিন্ন এলাকায় বেরিবাঁধ ভেঙে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। চরবাংলায় কোনো বেরিবাঁধ না থাকায় ওই চরের প্রায় দুই হাজার বাসিন্দা চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী জানান, আজ ভোররাত ২টা ৪২ মিনিটে বাতাসের সর্বোচ্চ গতি ১১১ কিলোমিটার রেকর্ড করা হয়েছে এবং সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, রবিবার বেলা বারোটায় জোয়ারের সময় কুয়াকাটার অনন্তপাড়া বেড়িবাঁধের বাইরে ফুফু ও বোনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য রওনা হলে শরীফ (২৪) নামের এক যুবক পানিতে ভেসে যায়। ১ ঘণ্টা পর স্থানীয়রা তার লাশ উদ্ধার করেছে।