কোটা সংস্কার আন্দোলন
সারাদেশে সংঘর্ষ, নিহত ৬
সমাচার প্রতিদিন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৪, ১১:৫৭ পিএম
ছবি-সংগৃহীত
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে এ নিয়ে মোট ছয়জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে তিনজন, ঢাকায় দুজন ও রংপুরে একজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুজন শিক্ষার্থী, একজন পথচারী এবং বাকি একজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
ঢাকা :
রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়ে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে অজ্ঞাতনামা দুই যুবক নিহত হয়েছেন। প্রথমে মঙ্গলবার বিকেলে গুরুতর আহত অবস্থায় এক যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন এক পথচারী। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।
তিনি বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় এক যুবককে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার কানের নিচে ও মুখের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে হাসপাতালে নিয়ে আসা ওই পথচারী তার নাম পরিচয় বলতে পারেননি। এরপর সন্ধ্যায় আরও এক যুবক নিহত হয়েছেন। তবে তার নাম পরিচয় জানা যায়নি; বয়স আনুমানিক ২৫। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
চট্টগ্রাম :
মঙ্গলবার বিকেল ৩টা থেকে নগরের মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট এবং ষোলশহরসহ আশেপাশের এলাকায় কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এর আগে দুপুর থেকে বিভিন্ন মোড়ে অবস্থা নেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা। দুই নম্বর গেট এলাকায় একটি বাস ভাঙচুর করে তারা। দফায় দফায় চলা সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন।
নিহতরা হলেন- ওয়াসিম আকরাম, ফয়সাল আহমেদ শান্ত (২৪) ও মোহাম্মদ ফারুক (৩২)। এরমধ্যে ওয়াসিম আকরাম চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি ছুরিকাঘাতে মারা গেছেন। ওয়াসিম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স থার্ড ইয়ারের ছাত্র। তার গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের পেকুয়ায়।
এছাড়া নিহত ফয়সাল আহমেদ শান্ত নগরীর এমইএস কলেজের ছাত্র। তার পিঠে গুলির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অন্যদিকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া মোহাম্মদ ফারুক (৩২) স্থানীয় একটি ওয়ার্কশপের মিস্ত্রি। নিহত মোহাম্মদ ফারুকের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী।
চট্টগ্রামে তিনজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন।
রংপুর :
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে রংপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাইদ নিহত হন। আবু সাইদ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুরের বাসিন্দা মকবুল হোসেনের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেরোবির ইংরেজি বিভাগের প্রধান আসিফ আল মতিন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ দুপুর ২টায় রংপুর খামার মোড় থেকে শিক্ষার্থীরা বিশাল মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং ফটকের সামনে আসেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় পুলিশ প্রায় ২০০ রাউন্ড গুলি ও রাবার বুলেট ছোড়ে। পুলিশের গুলিতে আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সাইদ নিহত হন।