ছবি-সংগৃহীত
কাপড় আমদানির মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে আনা এক কন্টেইনার বিদেশি মদের চালান আটক করেছে কাস্টমস অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) দল।
চীন থেকে আসা চালানটি জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নেমেছিল ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর। নানা কৌশলে সেটি বন্দর থেকে বের করার কৌশল খুঁজছিল আমদানিকারক-সিঅ্যান্ডএফ চক্রটি। তার আগেই কাস্টমসের হাতে ধরা পড়ে বুধবার রাতে।
বৃহস্পতিবার কন্টেইনার খুলে গণনার পর সেখানে ১১ হাজার ৬৭৬ লিটার মদ ধরা পড়ে। ব্ল্যাক লেবেল, বেলেনটাইন, স্মিরনহফ, পাসপোর্ট স্কস, সিভার্স রিগ্যাল, হানড্রেড পাইপারসসহ প্রায় ১১টি ব্রান্ডের এসব মদের চালানের বাজারমূল্য শুল্কসহ ১৪ কোটি টাকা।
নারায়ণগঞ্জের আদমজি ইপিজেডের প্রতিষ্ঠান ‘সুপ্রিম স্মার্ট ওয়ার লিমিটেড’ নামে চালানটি আনা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি দেশের একসময়ের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান ওপেক্স গ্রুপের; যার মালিক আনিসুর রহমান সিনহা। আমদানির ঘোষণা ছিল তৈরি পোশাক শিল্পের কাপড়ের। কিন্তু কন্টেইনার খুলে চালানে কোনও কাপড়ের সন্ধান মেলেনি।
মূলত ইপিজেডের নামে পোশাক শিল্পের যেসব কাঁচামাল আসে সেগুলোতে শুল্ক জড়িত থাকে না। সেই চালানে খুব একটা নজরদারি করে না কাস্টমস। ফলে অনায়াসেই সেই চালান স্ক্যান করে বন্দর থেকে বের হয়ে যায়, আর এই সুযোগটাই নেয় চক্রটি; কিন্তু তার আগেই আটক হলো।
এবারের চালানটির সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ছিল চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ বেপারি পাড়ার ‘হাফিজ ট্রেডিং প্রাইভেট লিমিটেড’। ফলে পুরো প্রক্রিয়াটি তাদের নেতৃত্বেই হয়েছে বলে ধারণা করছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান খালেদ হোসাইন মামুন বলেন, “আমি ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সর্বশেষ সিঅ্যান্ডএফের নামে কাজ করেছিলাম। এরপর ২০২৩ সালের ডিসেম্বর আটলান্টিক শিপিং এজেন্সি থেকে আমাকে ফোন দিয়ে বলা হয় ‘সুপ্রিম স্মার্ট ওয়্যার লিমিটেড’ একটি চালান আমার প্রতিষ্ঠানের নামে এসেছে। পরে আমি সেটি নিতে গেলে আমাকে তারা দেয়নি। পরে আমি থানায় জিডি করে চালানটি আনতে গেলে শিপিং লাইন দেয়নি। পরে বিষয়টি আমি কাস্টমস কমিশনার বন্দরকে জানিয়ে রাখি। এরপর এখন শুনলাম আমার প্রতিষ্ঠানের নামের মদের চালান এসেছে।”
যে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের নামে চালানটি আনা হয়েছে সেই সুপ্রিম স্মার্ট ওয়্যার লিমিটেডের উৎপাদন বন্ধ আছে বলে জানা গেছে। ফলে বিশাল একটি চক্র এই কাজটি করেছে বলে সন্দেহ করছে কাস্টমস।
চট্টগ্রাম কাস্টমস গোয়েন্দা দল- এআইআর শাখার প্রধান ডেপুটি কমিশনার একেএম খায়রুল বাশার বলেন, “আমরা এখনও তদন্ত শুরু করিনি। তবে প্রাথমিকভাবে জেনেছি যেই প্রতিষ্ঠানের নামে চালানটি এসেছে সেটির উৎপাদন বন্ধ আছে। ফলে বন্ধ প্রতিষ্ঠানের নামে আমদানি কীভাবে করল, কারা করল- সেটি তদন্তেই বেরিয়ে আসবে।”