শনিবার জাতীয় পার্টির সম্মেলনে রওশন এরশাদ
ফের ভাঙল সাবেক রাষ্ট্রপতি
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টি (জাপা)। শনিবার রওশন এরশাদ পন্থিদের
সম্মেলনের মাধ্যমে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। খণ্ডিত জাপার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে অশীতিপর
রওশন এরশাদ বলেছেন, আদালতের রায় অনুযায়ী লাঙ্গল আমার। একইসাথে জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন
জাপার মতো রওশনপন্থিরা নিজেদের মূলধারা বলে দাবি করছেন।
শনিবার (৯মার্চ) রাজধানীর
রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সম্মেলনে রওশনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির সম্মেলনে
একমাত্র চমক ছিল জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপার
উপস্থিতি। তিনি ছাড়া কাদেরের নেতৃত্বাধীন অংশ থেকে পদ হারিয়ে অন্য নেতারা আগে থেকেই
রওশনের সঙ্গে রয়েছেন। তবে জাতিয় সংসদ নির্বাচনে জাপার ১৩ জন নির্বাচিত এমপির কেউই রওশনের
সম্মেলনে আসেননি।
কাউন্সিলে ছিলেন না
সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ, এসএমএম আলম, ইকবাল হোসেন
রাজুসহ অনেকে। একইসাথে তারা আবার জিএম কাদেরের জাপায় ফিরতে যাচ্ছেন বলেও শোনা যাচ্ছে।
সম্মেলনে ৯ সদস্যের
কমিটি ঘোষণা করা হয়। বাকিদের নাম পরে ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়েছেন। রওশনের জাপায়
নির্বাহী চেয়ারম্যান হয়েছেন কাজী ফিরোজ রশিদ। সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান হয়েছেন সৈয়দ আবু
হোসেন বাবলা। এছাড়া কো-চেয়ারম্যান হয়েছেন সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম, রাহগির
আল মাহি সাদ এরশাদ, গোলাম সারোয়ার মিলন ও সুনীল শুভ রায়।
রওশনপুত্র সাদ এরশাদ
এখনও জি এম কাদেরের জাপার যুগ্ম মহাসচিব পদে রয়েছেন। রওশন নিজে রয়েছেন প্রধান পৃষ্ঠপোষক
পদে। অন্যদের অব্যাহতি দেওয়া হলেও রওশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন
জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির
দাবি, আজ সারাদেশ থেকে ১২ হাজার কাউন্সিলর এবং ডেলিগেট এসেছিলেন। সম্মেলন উপলক্ষে মৎস্য
ভবন মোড় থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটক পর্যন্ত ছিল রওশনপন্থিদের শোডাউন। তারা এরশাদ
এবং রওশনের ছবি-সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে আসেন। সম্মেলন ঘিরে ছিল পুলিশ ও র্যাবের
নিরাপত্তা।
সম্মেলনে আমন্ত্রণ করা
হলেও আওয়ামী লীগের কেউ আসেননি। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের
সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, জেপির মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলামসহ কয়েকটি ছোট দলের
নেতারা। ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের সহকারী রাষ্ট্রদূত ফেং জিজিয়া এবং কয়েকটি দেশের
দূতাবাসের কর্মকর্তারা।
এরশাদের প্রতিষ্ঠিত
জাতীয় পার্টি দলটি ভেঙে জন্ম নেওয়া জেপি, বিজেপি এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি নামে তিনটি
নিবন্ধিত দল রয়েছে। জাতীয় পার্টি (জাফর) নামে আরেকটি অনিবন্ধিত দল সক্রিয় রয়েছে। অতীতে
সক্রিয় ছিল জাতীয় পার্টি (জা-মো) এবং জাতীয় পার্টি (না-ফি) নামের দুটি অংশ।
সম্মেলনের প্রতিক্রিয়ায়
মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ব্র্যাকেটবন্দি আরও ১০ জাতীয় পার্টি হলেও কিছু যায় আসে না।
জিএম কাদের জাপার একমাত্র নেতা।