প্রতিকী ছবি
রমজান মাস, এ মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সংযমের সঙ্গে নানান ইবাদত
করে থাকেন। একইসাথে এ মাসে পবিত্রতার বিষয়েও সবাই বেশ সতর্ক থাকেন। রোজা রাখার উদ্দেশে
শেষ রাতে সেহরি খাওয়া সুন্নত। তবে স্বপ্নদোষ বা স্বামী-স্ত্রী সহবাসের পর গোসল করা
ফরজ। এ ফরজ গোসল না করে যদি সেহরি খাওয়া হয় তাহলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে কি-না, তা নিয়ে
অনেকের মনে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে।
আল্লাহকে খুশি করার উদ্দেশ্যে সুবহে সাদিক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত
পর্যন্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকাকেই রোজা বলা হয়। আপাতদৃষ্টিতে রোজা সহজ সরল একটি
ধর্মীয় আচরণের বিষয়। কিন্তু এটি নিয়ে বেশকিছু ভুল ধারণা বিদ্যমান, যেগুলো নিয়ে
মুসলমানদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তেমনই একটি হচ্ছে, ফরজ গোসলের আগে সেহরি খাওয়ার বিষয়টি
নিয়ে।
ইসলামি চিন্তাবিদরা বলছেন, নিয়ম অনুযায়ী গোসল ফরজ হওয়ার পর খাওয়া-দাওয়া
ও অন্যান্য কাজের আগে পবিত্র হয়ে নেয়া উত্তম। তবে জরুরি নয়। গোসল করা ছাড়াও খাওয়া
যায়। কারণ সেহরি খাওয়ার জন্য পবিত্রতা ফরজ নয়, বরং সুন্নত।
বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এই
বিষয়ে দুইভাবে বর্ণিত আছে, গোসল ফরজ হওয়ার পর খাওয়া-দাওয়া ও অন্যান্য কাজের পূর্বে
পবিত্র হয়ে নেওয়া উত্তম। তবে জরুরি নয়। গোসল করা ছাড়াও খাওয়া যায়। তাই গোসল ফরজ
অবস্থায় সেহরি খেতে পারবেন।
ফকিহবিদদের মতে, যদি গোসল ফরজ হয়ে যায় তা সত্ত্বেও সেহরি খেয়ে রোজা
রাখলে রোজা সহি হবে।
এই বিষয়ে মুসলিম শরিফের ২৫৯২ নম্বর হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, গোসল ফরজ
হওয়া সত্ত্বেও বিনা ওজরে কোন কারণ ছাড়া অপবিত্র অবস্থায় এক ওয়াক্ত নামাজের সময় অতিবাহিত
হয়ে যাওয়া মারাত্মক গোনাহ।
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, রমজান মাসে স্বপ্নদোষ
ব্যতীতই অপবিত্র অবস্থায় রাসুল (সা.) সুবহে সাদিক অতিক্রম করতেন। অতঃপর তিনি গোসল করে
রোজা রাখতেন।
(বোখারি : ১৮২৯, মুসলিম : ১১০৯)