ছবি-সংগৃহীত
বয়সটা ৩৬ ছুঁইছুঁই করছে। বোলিংয়েও ভাটার টান স্পষ্ট। আগের সেই চেনা ধার দেখা যাচ্ছে না। যে কারণে কিছুদিন আগে নেতৃত্বও ছাড়তে হয়েছে টিম সাউদিকে। সব মিলিয়ে শেষের ডাক শুনতে পাচ্ছিলেন ডানহাতি এই পেসার। এবার তিনি সাড়াও দিয়ে ফেললেন সময়ের ডাকে। টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন নিউজিল্যান্ডের এই কিংবদন্তি পেসার।
ঘরের মাঠে আসন্ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলবেন সাউদি। অবশ্য নিউজিল্যান্ড যদি আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠে, তাহলে আরেকটি ম্যাচ দীর্ঘায়িত হবে সাদা পোশাকে তার ক্যারিয়ারে। তবে সাদা বলের ক্রিকেট নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেননি সাউদি। আপাতত ঘরোয়া ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে খেলে যাবেন তিনি।
২০০৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ১৭ উইকেট শিকার করে নির্বাচকদের নজর কাড়েন সাউদি। এর কদিন পরই টেস্ট দলে ডাক পান তিনি। ওই বছরে মার্চে ১৯ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নেপিয়ারে টেস্ট অভিষেক তার। অভিষেকের প্রথম ইনিংসেই শিকার করেন ৫ উইকেট। দলের পরাজয়ের আগে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট হাতে ৯ ছক্কায় ৪৮ বলে ৭৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস উপহার দেন।
এরপর দ্রুতই তিন সংস্করণে দলের বড় ভরসা হয়ে ওঠেন সাউদি। এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের হয়ে ১০৪ টেস্ট, ১৬১ ওয়ানডে ও ১২৪ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন এই পেসার। টেস্টে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৮৫ উইকেট তার, ওয়ানডেতে তৃতীয় সর্বোচ্চ ২২১টি আর টি-টোয়েন্টিতে ১৬৪ উইকেট নিয়ে তিনিই সবার ওপরে। তিন সংস্করণ মিলিয়ে সাউদির উইকেট ৭৭০টি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৭০০ উইকেট নেই আর কারও।
নিউজিল্যান্ডের টেস্ট ইতিহাসের সেরা সাফল্যেও তার ছিল বড় অবদান। ২০২১ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে চারটিসহ ম্যাচে শিকার করেছিলেন পাঁচ উইকেট। তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স অবশ্য তার খুব একটা সুবিধের নয়। সবশেষ ১০ টেস্টে উইকেট নিতে পেরেছেন মোটে ১৫টি। তাই সাদা পোশাককে তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিতো দেরি করেননি ডানহাতি এই পেসার।
অবসরের ঘোষণায় নিউজিল্যান্ডকে ১৪ টেস্ট, ১ ওয়ানডে ও ২৯ টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দেওয়া এই কিউই পেসার বলেন, ‘বেড়ে ওঠার সময় আমার কেবল একটিই স্বপ্ন ছিল, নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলা। ব্ল্যাক ক্যাপদের হয়ে ১৮ বছর খেলতে পারা আমার জীবনের সর্বোচ্চ সম্মান ও প্রাপ্তি। তবে যে খেলাটা আমাকে এত কিছু দিয়েছে, সেখান থেকে সরে দাঁড়ানোর উপযুক্ত সময় মনে হচ্ছে এখনই।’
আরও যোগ করেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট সবসময়ই আমার হৃদয়ে বিশেষ জায়গা নিয়ে আছে। এত বছর আগে যে দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল, সেই একই দলের বিপক্ষে এত বড় সিরিজ দিয়ে এবং যে তিনটি মাঠ আমার কাছে অবিশ্বাস্যরকমের স্পেশাল, সেখানে খেলে বিদায় নিতে পারাটা আমার কাছে মনে হচ্ছে সবচেয়ে উপযুক্ত।’